কোলেস্টেরল হলো একটি মোমের মতো পদার্থ যা রক্তে পাওয়া যায় এবং এটি শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ, যেমন কোষের গঠন এবং হরমোন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমলে তা ধমনীগুলিতে প্লাক (চর্বির আস্তরণ) তৈরি করে, যা ধমনীগুলি সংকুচিত করে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে কী কী করণীয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কোলেস্টেরল প্রধানত দুই ধরণের হয়:
১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন:
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথমে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। খাদ্যাভ্যাসে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি করতে পারেন:
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
নিয়মিত ব্যায়াম HDL (ভালো কোলেস্টেরল) বাড়াতে এবং LDL (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:
ব্যায়াম না করার ক্ষেত্রে, জীবনের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানোর চেষ্টা করুন, যেমন লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করা, বা অফিসের কাছাকাছি হেঁটে যাওয়া।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
অতিরিক্ত ওজন কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ওজন কমালে খারাপ কোলেস্টেরল কমে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ে। খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ধূমপান ত্যাগ করুন:
ধূমপান ভালো কোলেস্টেরল (HDL) কমিয়ে দেয় এবং ধমনীর ক্ষতি করে, যা কোলেস্টেরল জমার ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করলে হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত হয় এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫. অ্যালকোহল সেবন কমিয়ে দিন:
অ্যালকোহল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক। অ্যালকোহল সেবন যদি করতেই হয়, তাহলে তা অত্যন্ত সীমিত পরিমাণে করা উচিত।
৬. ওষুধ সেবন করুন:
যদি খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে ডাক্তার ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন। সাধারণত নিচের ওষুধগুলো ব্যবহৃত হয়:
৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন:
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। রক্ত পরীক্ষা করে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়মিত মনিটর করা উচিত এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান ত্যাগ, এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টের সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। যদি আপনার কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, তাহলে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুরু করুন।